চট্টগ্রামে কৌশলে অসহায় নারীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কসহ নানা প্রতারণার অভিযোগে এক ভুয়া কবিরাজকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) নগরীর হালিশহরের বৌবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার হালিশহর থানায় হস্তান্তর করে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারকৃত কবিরাজের নাম মো. ইব্রাহিম হোসেন (৪২) ওরফে কবিরাজ ইব্রাহিম। তিনি ‘বোতলে জিন’ ভরার করিরাজ হিসেবে পরিচিত। ইব্রাহিম হালিশহর থানার মধ্যম রায়পুর এলাকার মৃত মৌলভী এরশাদ হোসেনের ছেলে। ইব্রাহিম তাবিজ, পানি পড়াসহ বিভিন্ন কৌশলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।
র্যাব-৭ এর সূত্রে জানা যায়, মো. ফারহাদুল ইসলাম (১৯) নামে মানসিক এক রোগীকে চিকিৎসা করাতে ইব্রাহিম কবিরাজের শরণাপন্ন হন স্বজনরা। ইব্রাহিম কবিরাজ স্বজনদের ফারহাদুল বাসায় নিয়ে যেতে বলেন। পরে বাসয় গেলে কিছু তাবিজ ও পানি পড়া দেন তিনি। পাশাপাশি বলেন- ফারহাদুলের ভাগ্যে মূল্যবান গুপ্তধন আছে। ইব্রাহিম তা উদ্ধার করে দেবেন। এজন্য কিছু টাকা খরচ করতে হবে ও কিছু সরঞ্জাম কিনতে হবে। তার কথা বিশ্বাস করে দুই লাখ টাকা দেন ফারহাদুলের স্বজনরা।
এরপর গুপ্তধন উদ্ধারের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন ইব্রাহিম। কিছুদিন পর তিনি জানান, গুপ্তধন উদ্ধারে আরও টাকা লাগবে। পরে ফারহাদুলের মা আরও দেড় লাখ টাকা দেন। পরে ইব্রাহিম বলে গুপ্তধন পাওয়া গেছে। উদ্ধারে আরও টাকা লাগবে। এভাবে ওই পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ইব্রাহিম। এরপরও গুপ্তধন না দেওয়ায় মঙ্গলবার তার কাছ থেকে টাকা ফেরত চায় ফারহাদুলের পরিবার। তখন ইব্রাহিম তাদের বেঁধে রাখার জন্য লোকজন ডাকেন। সেই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় রাস্তার পাশে র্যাবের টহল গাড়ি দেখে স্বজনরা র্যাবকে বিষয়টি জানান। পরে ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার জানান, ইব্রাহিম হোসেন একজন ভুয়া কবিরাজ। তাবিজ, পানি পড়াসহ বিভিন্ন কৌশলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। এছাড়া তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে সমস্যা সমাধানের কথা বলে অসহায় নারীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তিনি প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।